কোন ভাষায় পড়তে চান সিলেক্ট করুন

শনিবার, ২০ জানুয়ারী, ২০১৮

দেলোয়ার হোসেন দুলাল স্যার ও হোস্টেল জীবনের স্মৃতিচারণ - আল মারুফ মৃধা



ইন্টারমিডিয়েটের দুইটা বছর(০৯-১০) হোস্টেলে থাকার সোভাগ্য হয়েছিল আমার । মানুষের সাথে মেশা জীবন গুছিয়ে চলার প্রকৃ্ত শিহ্মা পেয়েছি হোস্টেল লাইফ থেকে । ছাত্র জীবনে হোস্টেলে থাকার সোভাগ্য পেয়েছি এই দুইটা বছর আর কখনো হয়নি । সুযোগ টি হয়েছিল স্যারের হাত ধরেই । আব্বুর সাথে যখন প্রথম কলেজে আসি উনার কাছেই আমাকে তুলে দিয়েছিল ,অভিভাবকের মতন আমাকে উনি আশ্রয় দিয়েছেন হোস্টেলের ২১৪ নাম্বার রুমে । তখন স্যার ছিলেন কলেজ হোস্টেলের দায়িপ্তে ।এই দুইটা বছর স্যারকে খুব কাছ থেকে দেখার আর সানিধ্য পাবার সুযোগ হয়েছিল আমার ।
কলেজের নীচ তলায় নামাজের রুমের কাছেই ছিল স্যারের অফিস । নামাজের জন্য হোস্টেলের প্রত্যকের উপর বিশেষ নজরদারী রাখতেন । রীতিমত নামাজ টাইমে মাঝে মাঝে হোস্টেলের প্রত্যেক রুম থেকে ছাত্রদের ধরে ধরে নামাজে নিয়ে যেতেন । আমার রুমে প্রায় দিনেই আসতেন তার মুখে “মারুফ” ডাকটি আমাকে আরো সচেতন হতে আরো মনোযোগী হত উৎসাহ দিয়েছে ।নামাজের ফাকি দেওয়ার কারনে প্রায় দিনেই ফজর বেলার নামাজের আগে সবাইর রুম থেকে জেগে তুলার মহান দায়িপ্ত ধরিয়ে দিতেন। মাঝে মাঝে তার অফিস রুমে তরফ করতেন উদ্দেশ্য কথা বলতেন বিভিন্ন ধরনের কথা ফাক বুঝে নামাজ পড়িয়ে নিতেন ।
একবার তার রুমে আমাকে ডেকে হোস্টেলের ম্যানেজারের দায়িপ্ত ধরিয়ে দিয়েছেন এর কারন
এক. তিনি আমার উপর আস্তা রেখেছেন
দুই.তিনি আমাকে সোজা করেছেন এই মহান দায়িপ্ত দিয়ে ।
ভাবা যায় এটা শুধু কলেজ নয় বিশ্ববিদ্যালয় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ছাত্রদের মিলন এখানে , হোস্টেলে হোস্টেলের বাহিরের কিছু মিল নিয়ে প্রায় (১৫০০-২০০০) ছাত্রদের খাবারের দায়িপ্ত একটা একাদশ শ্রেনীর ছাত্রের হাতে তা কি আদো সম্ভব ! সম্ভব নয় এতো বড় দায়িপ্ত । তিনি মূলত আমার কাধে দায়িপ্ত তুলে দায়িপ্ত যে কত ভারী জিনিস তা বুঝইয়ে দিয়েছেন । মানুষ না শাসিয়ে সোজা করা যায় এই শিহ্মা একমাত্র স্যারের কাছ থেকে এবং আমার বড় ভাই আল- মামুনের কাজ থেকে পেয়েছি ।
গতকাল বিকাল বেলা থেকেই প্রচন্ড মন খারাপ স্যারের কাজ থেকে ভালবাসাগুলো কষ্টকে ভীষন ভাবে ভারী করে তুলে নিজেকে । ভাল মানুষগুলো আল্লাহর প্রিয় তাই এভাবেই তাড়াতারী না ফেরার দেশে জান্নাতে চলে যায় । আল্লাহ স্যারকে জান্নাতবাসী করো ।
ব্যক্তিজীবনে স্যার ছাত্রজীবন থেকেই ছিলেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক এক পরিছন্ন রাজনীতিবীদ , ১৯৯০এর ঢা:বি:-এর বঙ্গবন্ধু হলের হ্যাপি-আলতাফ-দুলাল পরিষদের বিপ্লবী ছাত্রনেতা। কালকিনি পৌর আওয়ামীলীগের সাবেক সফল সভাপতি ,কালকিনি উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মানিত সদস্য ।
সব পরিচয় ছাপিয়ে দিয়ে তিনি বেচে থাকবেন হাজার বছর তার হাজার ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে কালকিনি সৈয়দ আবুল হোসেন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান,একজন দীনের মানুষ ,মানুষ গড়ার কারিগর । বেচে থাকুক আমাদের মাঝে অধ্যাপক আল-হাজ্ব দেলোয়ার হোসেন দুলাল স্যার ।
তিনি স্ত্রী ও দুই মেয়েসহ অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে গেছেন সকলদের সুস্থথা ও কল্যান কামনা করি ।