কোন ভাষায় পড়তে চান সিলেক্ট করুন

বৃহস্পতিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৬

মুহূর্ত অনুভূতি(১) - একলা চলো রে

একা পথ চলা আমি অনেক আগেই শিখে গেছি। কীভাবে সুখকে লাথি মেরে সংগ্রামের দিকে এগিয়ে যায় এক পাগল, তা কেবল পাগলই জানে। আমিও জ্যান্ত পাগলের মতো অদ্ভুত সব স্বপ্ন দেখতে ভালবাসি। অযথা অনুসন্ধান করে সময় নষ্ট করার মজাটা অনেক আগেই রপ্ত করেছি। পাগল ছাড়া দুনিয়া চলে না—আজকের এই নতুন সাজে আবারও সেই পাগলের পুরনো অসুখ জেগে উঠছে।

মনে হচ্ছে হাসি আসছে! এক গাল হেসে নাও!

আমি আমার যোগ্যতা নিয়ে মোটেও চিন্তিত নই। আমি দূরপাল্লার খেলোয়াড়। জীবনটা আসলে কয়েক বছর পর থেকেই শুরু হবে, সেটা অনেক আগেই বুঝে নিয়েছি। কারণ আমি জানি, আমার ঘাটতি আছে, আর এই সময়ে আমাকে অনেক কিছু শুনতে হবে, সহ্য করতে হবে। তবুও, উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্নটা কখনোই ছেড়ে দেব না। কারণ একটাই—নিজের প্রতি বিশ্বাস।

জীবনের পথে চলতে গিয়ে অনেক মুখোশধারী বন্ধু দেখেছি। তাদের ফাঁদে পড়ে ছোট ছোট মুহূর্তগুলো নষ্ট করেছি। আর নয়। এখন একা আছি, একাই থাকবো। হয়তো কিছুটা পিছিয়ে পড়বো, কিন্তু এই পিছিয়ে পড়াটাই আমাকে শিখাবে কীভাবে গুছিয়ে চলতে হয়।

বুধবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৬

জ্যেতিষী বাবা । ছোট গল্প । - আল মারুফ

 "ছোট গল্প "







২৫ তারিখে ঈদ, ২৯ তারিখে বিয়ে, অথচ এই নিয়ে রাফির কোনো মাথাব্যথা নেই। রাফি আছে তার মতো, আর মিথীলা নানা দুশ্চিন্তায়। এখনো রাফিকে গুছিয়ে আনতে পারেননি মিথীলা। বাবার কথা ছাড়া রাফি এক কদমও চলেন না। আজ মিথীলা রাফিকে বললো, "চল, মার্কেটে যাই, কিছু কেনাকাটা করবো।" কিন্তু রাফির সাফ কথা, "আজ বাড়ির বাইরে বের হতে পারবো না, বাবা বারণ করেছেন, কিন্তু কালকে বের হতে পারবো।" মিথীলার মন খারাপ হলেও, তা মেনে নিলেন।

রাফির বাবা, হামিদ খন্দকার, পেশায় একজন ব্যাংকার হলেও তিনি জ্যোতিষীও বটে। তিনি তার পূর্বপুরুষদের থেকে এই ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছেন। হামিদ সাহেবের বাবা মৃত্যুর আগে বলেছিলেন, "হামিদ, তুই আমাদের বংশের শেষ ব্যক্তি, যে এই ধারা বজায় রাখতে পারবে।" বাস্তবে তাই ঘটেছে। হামিদ খন্দকারেই এই ধারাবাহিকতা শেষ। রাফির এই নিয়ে কোনো মাথাব্যথা নেই।

সকালে মিথীলার ফোন আসে, "কি, কাল তো বললে আজ আমার সাথে মার্কেটে যাবে, মনে আছে তো?" রাফি সহজভাবেই জবাব দেয়, "হ্যাঁ, যাবো, রেডি হও, আসছি।" রুম থেকে বের হওয়ার আগে রাফি তার নিত্যকার অভ্যাস অনুযায়ী বাবার কাছে গিয়ে বলে, "আব্বু, হাত দেখো তো, আজ কি বের হওয়া যাবে?" হামিদ খন্দকার রাফির হাত দেখে মুচকি হেসে বললেন, "হ্যাঁ, আজ যেতে পারো।"

রাফি জানতে চায়, "যেতে তো পারবো, কিন্তু তুমি হাসলে কেন, আব্বু?"

হামিদ খন্দকার জবাব দেন, "তোর জন্য নয়, আমার জন্য হাসছি। আজ আমি কিছু অপ্রত্যাশিত উপহার পেতে যাচ্ছি, তাই।"

রাফি তাড়াতাড়ি বাসা থেকে বের হয়ে মিথীলার কাছে গেলো। মিথীলা রাফিকে নিয়ে সরাসরি দেশের প্রথম দেশীয় পোশাকের মার্কেট শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটে চলে গেলেন। মিথীলা তার পছন্দমতো পোশাক কিনে নিলেন। রাফিকে কিছু কিনে দিতে চাইলেও কী কিনবেন, তা বুঝে উঠতে পারছিলেন না। শেষে নিজ থেকেই সিদ্ধান্ত নিলেন, ঈদ সামনে, তাই একটা পাঞ্জাবি কিনে রাফিকে সারপ্রাইজ দেবেন।

মার্কেটের দোতলার এক দোকানে রাফিকে একটি সাদা ডিজাইন করা পাঞ্জাবি দেখতে দেখলেন মিথীলা। ধরে নিলেন, সেটাই রাফির পছন্দ হয়েছে। ফাঁকে, রাফির অজান্তেই পাঞ্জাবিটি কিনে ফেললেন মিথীলা। ফেরার পথে রিকশায় বসে মিথীলা রাফির হাতে ব্যাগটি দিলেন। রাফি জানতে চাইলেন, "ব্যাগে কী আছে?" মিথীলার সাফ জবাব, "বাড়ি গিয়ে দেখবে, এখন নয়।"

বাড়ি এসে পাঞ্জাবিটি দেখে রাফি অবাক হয়ে গেলেন। "আরে, এই পাঞ্জাবিটা তো আমি আব্বুর জন্য পছন্দ করেছিলাম!" নিজে নিজেই বললেন রাফি।

ঠিক তখনই মিথীলার ফোন এলো, "কী, পাঞ্জাবিটা খুব পছন্দ হয়েছে, তাই না? তোমাকে দেখেই বুঝেছিলাম!"

রাফি জবাব দিলেন, "পছন্দ হয়েছিল ঠিকই, তবে আমার জন্য নয়, আব্বুর জন্য পছন্দ করেছিলাম।"

মিথীলা পুরো বোকা হয়ে গেলেন, কিন্তু সাথে সাথেই জানিয়ে দিলেন, "না হয় হবু শ্বশুরকে গিফট দিলাম!"

রাফি বুঝতে পারলেন, তার বাবার কথাই ঠিক। তিনি আজ সত্যিই কিছু অপ্রত্যাশিত পেয়েছেন।

২৯ তারিখে বিয়ের দিনে ফুলচন্দনের রাতে হামিদ খন্দকার তাদের হাত দেখে বলেছিলেন, তাদের পরিবারে দুটি পুত্রসন্তান আসবে। রাফি আর মিথীলার বিয়ের ৮ বছর হয়ে গেছে। হামিদ খন্দকার মারা গেছেন প্রায় দু'বছর হলো। অথচ সেই ভবিষ্যদ্বাণী সত্য হয়নি। মিথীলার পরিবারে দুটি কন্যাসন্তান রয়েছে, কোনো পুত্রসন্তান নেই।

এক রাতে রাফি স্বপ্নে তার বাবার দেখা পান। বাবাকে তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, "কই, তোমার দুইটা নাতি? আমি আর কতকাল অপেক্ষা করবো?"

বাবা জবাব দিলেন, "অপেক্ষা করো। আল্লাহ ধৈর্যশীলদের পছন্দ করেন।"

রাফি ও মিথীলা ধৈর্য ধরলেন। তাদের বিয়ের ১৪ বছরে এক জোড়া পুত্রসন্তানের জন্ম হলো, যেন হামিদ খন্দকারের ভবিষ্যদ্বাণী অবশেষে সত্যি হলো।

বৃহস্পতিবার, ১ ডিসেম্বর, ২০১৬

আমার শৈশবের কার্টুন দেখার স্মৃতি - আল মারুফ





ফেলে আসা শৈশবের স্মৃতিগুলো সত্যিই মনের গহীনে এক বিশেষ জায়গা করে নেয়। তখন বিটিভি ছাড়া আর কোনো মাধ্যম ছিল না কার্টুন দেখার, আর সেই সময়কার সব কার্টুনই ছিল দারুণ। সারা সপ্তাহজুড়ে অপেক্ষা করতাম কখন সেই কাঙ্ক্ষিত কার্টুনের সময় হবে। ছোটবেলার সেই কার্টুনগুলো যেন জীবনেরই এক অংশ হয়ে উঠেছিল।

যদিও এখনকার সময়ে, বয়স বাড়ার সাথে সাথে অনেকেই কার্টুন থেকে দূরে সরে যায়, তবুও কিছু মানুষ আছেন যারা এখনো কার্টুনের প্রতি এক ধরনের ভালোবাসা ধরে রেখেছেন। আমি নিজেও তাদের মধ্যে একজন। এখনও যখন কোনো চ্যানেলে পুরোনো প্রিয় কার্টুন চরিত্রগুলো দেখি, সেই শৈশবে ফিরে যাই।

Jআমার প্রিয় কিছু কার্টুন:
  • Popeye the Sailor Man: সম্ভবত একুশে টিভিতে প্রচার হতো। এই শো দেখে শাক-তরকারির শক্তির ধারণাটা পেয়েছিলাম।

  • Samurai X: চাইনিজ অ্যানিমেশন। এর স্টার্টিং গান আর চরিত্রের হেয়ারস্টাইল এখনো মনে গেঁথে আছে।

  • The Jungle Book (মোগলি): মোগলির গল্পটি বাংলা ভাষায় দেখতে ভালো লাগত।

  • Captain Planet, Tom & Jerry, Minna (মিনা): এগুলো ছোটবেলা থেকেই ভালো লাগার মতো।

এখনও আমার কিছু শিশুসুলভ অভ্যাস ধরে রেখেছি। এই কার্টুনগুলো আমার চিন্তাচেতনায় এতটাই গভীরভাবে প্রভাব ফেলেছিল যে সেগুলো ছাড়তে চাই না।

Godzilla: এটা আমার আরেকটি প্রিয় কার্টুন। মুভির মতো কার্টুনের শুরুর টাইটেল গানটি আমার খুব প্রিয় ছিল। ওখানে একজন সাংবাদিক ক্যামেরা নিয়ে বিশালাকৃতির গডজিলা ভিডিও করছিল—এটা মনে হলে এখনও চোখের সামনে ভাসে।

Jumanji: খুব প্রিয়। লুডুর গুটি চাললেই নতুন রাজ্যে চলে যেত, সেই গল্পগুলো এখনো স্বপ্নের মতো।

Back to the Future: এই কার্টুন থেকেই প্রথম টাইমমেশিনের ধারণা পাই। এক এক পর্বে এক এক অভিযান, যেন আমিও সেই অভিযানে অংশ নিচ্ছি।

এগুলো সবই আমার শৈশবের অবিচ্ছেদ্য অংশ, এবং আমি এগুলোকে আজও মিস করি।