কোন ভাষায় পড়তে চান সিলেক্ট করুন

বুধবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৬

জ্যেতিষী বাবা । ছোট গল্প । - আল মারুফ

 "ছোট গল্প "







২৫ তারিখে ঈদ ২৯ তারিখে বিয়ে অথচ এই নিয়ে রাফির কোন মাথাব্যাথা নেই ।রাফিআছে তার মতন আর মিথীলার আছে নানা দুচিন্তায় । এখন ও রাফিকে গুছানোর দিকে আনতে পারেন নাই। বাবার কথা ছাড়া রাফি এক কদম চলেন না ।আজ মিথীলা রাফিকে বললো, ' চল মাকেটে যাই কিছু কেনাকাটা করবো' ।কিন্তু রাফির সাফ কথা,' আজ বাড়ির বাহিরে বের হতে পারবো না বাবা বারণ করেছেন কিন্তু কালকে বের হতে পারবেন। মিথীলার মন খারাপ হলে ও তা মেনে নিলেন। রাফির বাবা হামিদ খন্দকার পেশায় একজন ব্যাংকার কিন্তু তিনি জ্যোতিষী ও বটে ।তিনি তার পূবপুরুষ থেকে এ ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছেন ।হামিদ সাহেবের বাবা পরলোগমন করার আগে বলেছিলেন,' হামিদ তুই এই আমার বংশের শেষ ব্যাক্তি যে এই ধারা বজায় রাখতে পারবে '।বাস্তবে তাই ঘটেছে হামিদ খন্দকারেই শেষ ব্যাক্তি তার ছেলে রাফির এই নিয়ে কোন মাথাব্যাথা নেই। সকালে মিথীলার ফোনে,' কি কাল তো বললে আজ আমার সাথে মাকেটে যাবে মনে আছে তো ' রাফির সহজ জবাব, 'যাব রেডি হও আসছি'। রুম থেকে বের হবার আগে রাফি তার নিত্যকার অভ্যাস অনুযায়ী তার বাবার কাছে গিয়ে,' আব্বু হাত দেখতো আজ কি বের হওয়া যাবে'। হামিদ খন্দকার রাফির হাত দেখে মুচকি হেসে বললো,' হুম আজ যেতে পারো'। 'যেতে তো পারবো কিন্তু তুমি হাসলে কেন আব্বু, রাফি কৌতুহল হয়ে তার বাবাকে।' ওরে তোর জন্য নয় আমার জন্য হাসছি আমি আজ কিছু অপ্রত্যাশিত উপহার পেতে যাচ্ছি তাই'। রাফি তাড়াতাড়ি বাসা থেকে নেমে মিথীলার কাছে গেলেন। মিথীলা রাফিকে নিয়ে সরাসরি চলে গেলের দেশের প্রথম দেশীয় পোশাকের মাকেট শাহবাগের আজিজ সুপার মাকেটে। মিথীলা তার পছন্দের মত পোশাক পরিচ্ছেদ কিনে নিলেন। রাফিকে কিছু কিনে দিবে কিন্তু কি কিনে দিবে তা ভেবে পাচ্ছেন না।শেষে নিজ থেকে মিথীলা সীদ্বান্ত নিলের সামনের তো ঈদ তাই একটা পাঞ্জাবি কিনে রাফিকে গিফট দিয়ে Surprise দেওয়া যাক। কিন্তু রাফির পছন্দের ডিজাইন কি বুঝে উঠেতে পারছেন না। মাকেটের দোতলার কারখানা ব্যান্ডের একটি দোকানে রাফিকে দেখলেন সে একটি সাদা রঙ্গের ডিজাইন করা পাঞ্জাবি দেখছেন নেড়েচেড়ে। মিথীলা ধরে নিলেন সেটি রাফির পছন্দ হয়েছে। এক ফাকে সুযোগ বুঝে রাফির অজান্তে পাঞ্জাবিটি কিনে ফেললো মিথিলা। ফেরার পথে রিক্সায় বসে মিথীলা রাফির হাতে ব্যাগটি দিল। রাফি মিথীলার কাছে জানতে চেয়েছিল ব্যাগে কি আছে কিন্তু মিথীলার সাফ জবাব বাড়ি গিয়ে দেখবে তা ছাড়া নয়। কি আর করার রাফি তাই করলো। বাড়ি এসে পাঞ্জাবিটা দেখে তো রাফি পুরা ত হয়ে গেলেন। 'আরে এই পাঞ্জাবিটা তো আমি আব্বুর জন্য পছন্দ করেছিলাম' নিজেকে নিজে বলিলেন রাফি। হঠাৎ রাফির ফোন বেজে উঠলো মিথীলার ফোন, ' কি পাঞ্জাবিটা তোমার খুব পছন্দ হয়েছে তাই না আমি মাকেটে তোমাকে দেখেই বুঝেছিলাম'। 'হুম পছন্দ হয়েছিল ঠিকেই তবে আমার জন্য না আব্বুর জন্য পছন্দ করেছিলাম' রাফির জবাব। মিথীলা পুরো বোকা হয়ে গেলেন কিন্তু তট জলদি রাফিকে জানিয়ে নিলেন ' না হয় হবু শ্বশুরকে গিফট দিলাম।রাফির আজ ও বুঝার বাকি রইলো না যে তার আব্বুর কথাটিই ঠিক তিনি আজ অপ্রতাশিত কিছু পেয়েছেন। ২৯ তারিখে বিয়ের দিন ফুলচন্দন রাতে রাফির আর মিথীলার দুজনের হাতদেখে হামিদ খন্দকার বলেছেন তাদের পরিবারে দুটি পুত্র সন্তান আসবে। মিথীলার রাফির বিয়ের বিয়ের ৮ বছর হয়ে গেছে। হামিদ খন্দকার মারা গেছেন প্রায় দুবছর। অথচ আর ভবিষ্যৎদ্বারী সত্য ফলছে না। হামিদ মিথীলার পরিবারে দুটি কন্যা সন্তান কোন পুত্র সন্ত্রানের দেখা যায়। তাদের পরিবারে দুটি তো দূরের কথা একটি পুত্র সন্ত্রান নাই। দুচিন্তায় তাদের রাত্রি কাটে। ঘুমের ঘোরে একদিন রাফি আর বাবার দেখা পান। 'কই তোমার দুইটা নাতি আমি আর কতকাল থাকবো এমন ' ঘুমের ঘরে রাফি তার আব্বুকে। রাফির আব্বুর সাক্কা জবাব,' অপেহ্মা কর আল্লাহ ধৈয্যশীল কে পছন্দ করের। রাফি মিথীলা ধৈয্য ধরলেন তাদের বিয়ের ১৪ বছর বয়সে তাদের পরিবারে কোলজুড়ে এল এক জোড়া পুত্র সন্তান।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন